বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম. আজকের আলোচনার বিষয় হচ্ছে রোজা ভঙ্গের কারণ
Table of Contents
রোজা ভঙ্গের কারণ
রোজা ভঙ্গের কারণগুলোকে তিন ভাগে ভাগ করা যায়:
১) ইচ্ছাকৃতভাবে রোজা ভঙ্গ
- খাওয়া-দাওয়া: ইচ্ছাকৃতভাবে খাওয়া-দাওয়া করলে রোজা ভেঙে যায়। এর মধ্যে পানি, খাবার, ওষুধ ইত্যাদি গ্রহণ করা অন্তর্ভুক্ত।
- সহবাস: স্ত্রীর সাথে সহবাস করলে রোজা ভেঙে যায়।
- বমি করানো: ইচ্ছাকৃতভাবে বমি করালে রোজা ভেঙে যায়।
- ইসলাম ত্যাগ: ইসলাম ত্যাগ করলে রোজা ভেঙে যায়।
২) অজান্তে রোজা ভঙ্গ
- ভুলে খাওয়া-দাওয়া: ভুলে খাওয়া-দাওয়া করলে রোজা ভেঙে যায়। তবে, যদি দ্রুত মনে পড়ে এবং থেমে যায়, তাহলে রোজা ভাঙবে না।
- ভুলে পানি পান: ভুলে পানি পান করলে রোজা ভেঙে যায়। তবে, যদি দ্রুত মনে পড়ে এবং থেমে যায়, তাহলে রোজা ভাঙবে না।
- মাসিক বা হায়েজ: মেয়েদের মাসিক বা হায়েজ শুরু হলে রোজা ভেঙে যায়।
- বমি হওয়া: ইচ্ছার বাইরে বমি হলে রোজা ভেঙে যায় না।
- অজ্ঞানতা: অজ্ঞতার কারণে রোজা ভেঙে গেলে কাফফারা ওয়াজিব হয় না।
৩) অন্যান্য কারণ
- ইচ্ছাকৃতভাবে বমি করানো: ইচ্ছাকৃতভাবে বমি করালে রোজা ভেঙে যায়।
- নাকে ওষুধ প্রবেশ করানো: নাকে ওষুধ প্রবেশ করালে রোজা ভেঙে যায়।
- কান দিয়ে ওষুধ প্রবেশ করানো: কান দিয়ে ওষুধ প্রবেশ করালে রোজা ভেঙে যায়।
- সূর্যাস্তের আগে ইফতার করা: সূর্যাস্তের আগে ইফতার করলে রোজা ভেঙে যায়।
উল্লেখ্য
- রোজা ভেঙে গেলে কাফফারা ওয়াজিব হতে পারে।
- রোজা ভেঙে গেলে কাজা আদায় করতে হবে।
- রোজার বিষয়ে সন্দেহ হলে আলেম-উলামাদের সাথে পরামর্শ করা উচিত।
স্বপ্নদোষ কি রোজা ভঙ্গের কারণ
স্বপ্নদোষ রোজা ভঙ্গের কারণ নয়। রোজার অবস্থায় ঘুমিয়ে পড়ে স্বপ্নদোষ হলে রোজা ভাঙবে না। তবে স্বপ্নদোষের ফলে গোসল ফরজ হবে।
কারণ
- রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, “তোমাদের কারো যদি রোজার অবস্থায় স্বপ্নদোষ হয়, তাহলে সে গোসল করবে এবং রোজা রাখবে।” (সহীহ মুসলিম)
- স্বপ্নদোষের কারণে মানুষের নিয়ন্ত্রণ থাকে না।
- এটি একটি প্রাকৃতিক ঘটনা।
তবে
- স্বপ্নদোষের কারণে যদি বীর্যপাত হয়, তাহলে পুরো শরীর, মাথা ও চুল ধুয়ে গোসল করতে হবে।
- গোসলের সময় মুখ ও নাক ধুয়ে ফেলতে হবে।
- গোসলের পরে ওজু করে নামাজ পড়তে হবে।
উল্লেখ্য:
- রোজার অবস্থায় স্বপ্নদোষ হলে রোজা ভাঙবে না, তবে যৌন ক্রিয়াকলাপে লিপ্ত হলে রোজা ভেঙে যাবে।
- রোজার অবস্থায় স্বপ্নদোষ হলে কাফফারা ওয়াজিব হবে না।
রোজা ভঙ্গের কারণ কয়টি
রোজা ভঙ্গের কারণ অনেকগুলো আছে। তবে, মূলত তিনটি কারণে রোজা ভেঙে যায়। সেগুলো হলো:
১. খাওয়া: রোজার অবস্থায় ইচ্ছাকৃতভাবে কিছু খেয়ে ফেললে রোজা ভেঙে যাবে। তবে, ভুলে খেয়ে ফেললে বা জোর করে খাওয়ানো হলে রোজা ভাঙবে না।
২. পান করা: রোজার অবস্থায় ইচ্ছাকৃতভাবে কিছু পান করলে রোজা ভেঙে যাবে। তবে, ভুলে পান করে ফেললে বা জোর করে পান করানো হলে রোজা ভাঙবে না।
৩. স্ত্রী-সম্পর্ক: রোজার অবস্থায় স্ত্রীর সাথে সহবাস করলে রোজা ভেঙে যাবে। তবে, স্ত্রীর সাথে স্পর্শ করলে বা চুমু খেলে রোজা ভাঙবে না।
এছাড়াও, আরও কিছু কারণে রোজা ভেঙে যেতে পারে। সেগুলো হলো:
- বমি করলে: ইচ্ছাকৃতভাবে বমি করলে রোজা ভেঙে যাবে। তবে, অসুস্থতার কারণে বমি হলে রোজা ভাঙবে না।
- মুখ ভরে বমি করলে: মুখ ভরে বমি করলে এবং বমি গিলে ফেললে রোজা ভেঙে যাবে।
- ইঞ্জেকশন নেওয়া: রোজার অবস্থায় শরীরে পুষ্টি বা ওষুধ প্রদানের উদ্দেশ্যে ইঞ্জেকশন, ড্রিপ ইত্যাদি গ্রহণ করলে রোজা ভেঙে যাবে।
- সূর্যাস্তের পূর্বে ইফতার করা: সূর্যাস্তের পূর্বে ইচ্ছাকৃতভাবে ইফতার করলে রোজা ভেঙে যাবে।
- হায়েজ ও নিফাস: নারীদের মাসিক ঋতু ও প্রসবের পর রক্তপাতের সময় রোজা রাখা ওয়াজিব নয়।
রোজা ভঙ্গের ক্ষেত্রে কিছু বিষয় মনে রাখা জরুরি
- রোজা ভঙ্গের কারণ সম্পর্কে যদি সন্দেহ থাকে, তাহলে সতর্কতার অবলম্বন করা উচিত।
- রোজা ভেঙে গেলে কাজা আদায় করা ওয়াজিব।
- যদি ইচ্ছাকৃতভাবে রোজা ভাঙা হয়, তাহলে কাজার সাথে সাথে কাফফারাও আদায় করতে হবে।