বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম. আজকের আলোচনার বিষয় হচ্ছে পিরিয়ডের সময় কি সূরা পড়া যায়
পিরিয়ডের সময় কি সূরা পড়া যায়,পিরিয়ডের সময় দোয়া কবুল হয়,পিরিয়ডের ব্যথা কমানোর দোয়া,পিরিয়ডের সময় মুখস্থ সুরা পড়া যাবে কি,আমাদের এই পোস্টটি পড়লে আপনার এই সবগুলো প্রশ্নের উত্তর একসাথে জানতে পারবেন।
Table of Contents
পিরিয়ডের সময় কি সূরা পড়া যায়
পিরিয়ডের সময় সূরা পড়ার বিষয়ে ইসলামী আইনশাস্ত্রে দুটি মত রয়েছে। একটি মত হল, পিরিয়ডের সময় কোনোভাবেই সূরা পড়া যাবে না, মুখস্থ হোক বা লিখিত হোক। এ মতের পক্ষে যুক্তি হল, কোরআন আল্লাহর কালাম এবং এটি পবিত্র। অপবিত্র অবস্থায় কোরআন স্পর্শ করা বা পড়া হারাম।
অন্য মত হল, পিরিয়ডের সময় মুখস্থ সূরা পড়া জায়েজ, তবে লিখিত সূরা স্পর্শ করা বা পড়া হারাম। এ মতের পক্ষে যুক্তি হল, মুখস্থ সূরা আল্লাহর কালামের প্রতিনিধিত্ব করে, কিন্তু লিখিত সূরা তা করে না। তাই মুখস্থ সূরা পড়ার ক্ষেত্রে অপবিত্রতা নিয়ে কোনো সমস্যা নেই।
বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় ইসলামি আইনজ্ঞরা সাধারণত দ্বিতীয় মতটিকে সমর্থন করেন। তারা বলেন, পিরিয়ডের সময় মুখস্থ সূরা পড়ার মাধ্যমে নারীরা ইসলামি শিক্ষা অর্জন করতে এবং আল্লাহর সাথে তাদের সম্পর্ককে মজবুত করতে পারে।
সুতরাং, আপনি যদি পিরিয়ডের সময় সূরা পড়তে চান, তাহলে মুখস্থ সূরা পড়তে পারেন। তবে লিখিত সূরা স্পর্শ করা বা পড়া থেকে বিরত থাকুন।
পিরিয়ডের সময় দোয়া কবুল হয়
হ্যাঁ, পিরিয়ডের সময় দোয়া কবুল হয়। এটি একটি প্রচলিত ইসলামী বিশ্বাস যে পিরিয়ডের সময় দোয়া কবুল হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। এই বিশ্বাসের পেছনে দুটি কারণ রয়েছে:
- প্রথমত, পিরিয়ডের সময় নারীরা শারীরিক ও মানসিকভাবে দুর্বল থাকেন। এই দুর্বল অবস্থায় তারা আল্লাহর কাছে বেশি করে সাহায্য ও বিনিময় প্রার্থনা করেন।
- দ্বিতীয়ত, পিরিয়ডের সময় নারীরা অপবিত্র অবস্থায় থাকেন। এই অপবিত্র অবস্থায় তারা আল্লাহর কাছে ক্ষমা ও নিষ্পত্তি প্রার্থনা করেন।
এই দুটি কারণে পিরিয়ডের সময় নারীদের দোয়া কবুল হওয়ার সম্ভাবনা বেশি বলে মনে করা হয়।
অবশ্যই, দোয়া কবুল হওয়ার জন্য শুধুমাত্র পিরিয়ডের সময় প্রার্থনা করাই যথেষ্ট নয়। দোয়া কবুল হওয়ার জন্য দোয়ার শর্তাবলী পূরণ করাও গুরুত্বপূর্ণ। দোয়ার শর্তাবলী হল:
- নিষ্ঠার সাথে দোয়া করা
- দোয়ার সময় আল্লাহর প্রতি পূর্ণ ভরসা রাখা
- দোয়ার মধ্যে কোনো শিরক বা কুফর না থাকা
- দোয়ার সাথে সৎ কাজ করা
এসব শর্তাবলী পূরণ করে যদি পিরিয়ডের সময় দোয়া করা হয়, তাহলে দোয়া কবুল হওয়ার সম্ভাবনা আরও বেশি থাকে।
পিরিয়ডের ব্যথা কমানোর দোয়া
আরবি | أَعُوذُ بِعِزَّةِ اللَّهِ وَقُدْرَتِهِ مِنْ شَرِّ مَا أَجِدُ وَأُحَاذِرُ |
উচ্চারণ | বিসমিল্লাহি আউজু বিইজ্জাতিল্লাহি ওয়া কুদরাতিহি মিন শাররি মা আঝিদু ওয়া উহাজিরু। |
অর্থ | আল্লাহর নামে আমি আল্লাহর অসীম সম্মান ও তাঁর বিশাল ক্ষমতার ওসিলায় আমার অনুভূত এই ব্যথার ক্ষতি থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করি।’ |
আমি আল্লাহর অসীম সম্মান ও তাঁর বিশাল ক্ষমতার অসিলায় আমার অনুভূত এই ব্যথার ক্ষতি থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করি।
পিরিয়ডের ব্যথা কমানোর দোয়া উৎস
এই দোয়াটি হাদিসে বর্ণিত হয়েছে। হযরত উসমান বিন আবুল আস (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, “আমি একদিন রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর কাছে গেলাম এবং আমার ব্যথার কথা বললাম। তিনি আমাকে বললেন, ‘তুমি তোমার ডান হাত ব্যথার স্থানে রেখে সাতবার এই দোয়া বলো।’”
প্রার্থনা
এই দোয়াটি পিরিয়ডের ব্যথা কমানোর জন্য একটি কার্যকর দোয়া হিসেবে বিবেচিত হয়। দোয়াটি প্রত্যেকবার ব্যথা অনুভব করলে সাতবার পড়তে হবে। দোয়াটি পড়ার সময় ব্যথার স্থানে হাত রেখে পড়া উত্তম।
পিরিয়ডের ব্যথা কমানোর অন্যান্য উপায়
পিরিয়ডের ব্যথা কমানোর জন্য কিছু অন্যান্য উপায়ও রয়েছে। যেমন:
- পর্যাপ্ত বিশ্রাম নেওয়া
- গরম সেঁক নেওয়া
- ব্যথানাশক ওষুধ সেবন
- ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া
যদি পিরিয়ডের ব্যথা তীব্র হয় বা দীর্ঘ সময় ধরে থাকে, তাহলে অবশ্যই একজন ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করা উচিত।
পিরিয়ডের সময় মুখস্থ সুরা পড়া যাবে কি
হা, পিরিয়ডের সময় মুখস্থ সুরা পড়া যাবে। এটি ইসলামী আইনশাস্ত্রে একটি স্বীকৃত মত। এই মতের পক্ষে যুক্তি হল, মুখস্থ সুরা আল্লাহর কালামের প্রতিনিধিত্ব করে, কিন্তু লিখিত সুরা তা করে না। তাই মুখস্থ সুরা পড়ার ক্ষেত্রে অপবিত্রতা নিয়ে কোনো সমস্যা নেই।
বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় ইসলামি আইনজ্ঞরা সাধারণত এই মতটিকে সমর্থন করেন। তারা বলেন, পিরিয়ডের সময় মুখস্থ সুরা পড়ার মাধ্যমে নারীরা ইসলামি শিক্ষা অর্জন করতে এবং আল্লাহর সাথে তাদের সম্পর্ককে মজবুত করতে পারে।
সুতরাং, আপনি যদি পিরিয়ডের সময় মুখস্থ সুরা পড়তে চান, তাহলে কোনো সমস্যা নেই। তবে লিখিত কোরআন স্পর্শ করা বা পড়া থেকে বিরত থাকুন।