বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম. আজকের আলোচনার বিষয় হচ্ছে ইফতারের দোয়া বাংলা
Table of Contents
ইফতারের দোয়া বাংলা
বছর ঘুরে আবার এসেছে রহমত, মাগফিরাত ও নাজাতের মাস রমজান। এই মাসটি মুসলিমদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং পবিত্র। রমজান মাসে মুসলিমরা ভোর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত রোজা রাখে। রোজা রাখার পাশাপাশি, মুসলিমরা এই মাসে আরও বেশি নামাজ, কোরআন তেলাওয়াত, দান-ধ্যান এবং অন্যান্য ইবাদত করে।
ইফতারের সময়
- ইফতারের সময় বেশি বেশি দোয়া করা উচিত।
- দ্রুত ইফতার শেষ করে নামাজে যাওয়া উচিত।
- ইফতারের সময় ভারী খাবার না খাওয়া।
- খেজুর দিয়ে ইফতার করার চেষ্টা করা।
ইফতারের দোয়া বাংলা
ইফতারের দোয়া আরবি | بسم الله اَللَّهُمَّ لَكَ صُمْتُ وَ عَلَى رِزْقِكَ اَفْطَرْتُ |
উচ্চারণ | ‘আল্লাহুম্মা লাকা ছুমতু ওয়া আলা রিযক্বিকা ওয়া আফতারতু বিরাহমাতিকা ইয়া আরহামার রাহিমীন। |
অর্থ | হে আল্লাহ! আমি তোমারই সন্তুষ্টির জন্য রোজা রেখেছি এবং তোমারই দেয়া রিযিক্বের মাধ্যমে ইফতার করছি। |
আবদুল্লাহ ইবনে ওমর রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন ইফতার করতেন, তখন বলতেন
ইফতারের পরে দোয়া
আরবি | ذَهَبَ الظَّمَأُ وَابْتَلَّتِ الْعُرُوقُ وَثَبَتَ الأَجْرُ إِنْ شَاءَ اللهُ |
উচ্চারণ | জাহাবাজ জামাউ ওয়াবতালাতিল উ’রুকু ওয়া ছাবাতাল আঝরু ইনশাআল্লাহ। |
অর্থ | (ইফতারের মাধ্যমে) পিপাসা দূর হলো, শিরা-উপসিরা সিক্ত হলো এবং যদি আল্লাহ চান সাওয়াবও স্থির হলো। |
সেহরির দোয়া
- সেহরির সময় পুষ্টিকর খাবার খাওয়া উচিত।
- সেহরির পরে যতক্ষণ সম্ভব ঘুমিয়ে থাকা উচিত।
- ভোরবেলায় তাহাজ্জুদ নামাজ পড়া উচিত।
আরবি | نَوَيْتُ اَنْ اُصُوْمَ غَدًا مِّنْ شَهْرِ رَمْضَانَ الْمُبَارَكِ فَرْضَا لَكَ يَا اللهُ فَتَقَبَّل مِنِّى اِنَّكَ اَنْتَ السَّمِيْعُ الْعَلِيْم |
উচ্চারণ | নাওয়াইতু আন আছুম্মা গাদাম মিন শাহরি রমাদানাল মুবারাকি ফারদাল্লাকা ইয়া আল্লাহু ফাতাকাব্বাল মিন্নি ইন্নিকা আনতাস সামিউল আলিম। |
অর্থ | হে আল্লাহ! আমি আগামীকাল পবিত্র রমজানের তোমার পক্ষ থেকে নির্ধারিত ফরজ রোজা রাখার ইচ্ছা পোষণ (নিয়্যত) করলাম। অতএব তুমি আমার পক্ষ থেকে (আমার রোজা তথা পানাহার থেকে বিরত থাকাকে) কবুল কর, নিশ্চয়ই তুমি সর্বশ্রোতা ও সর্বজ্ঞানী। |
ইফতারের আগে দোয়া কবুল হাদিস
ইফতারের সময়
- রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, “যতক্ষণ না লোকেরা ওয়াক্ত হওয়ামাত্র ইফতার করবে, ততক্ষণ তারা কল্যাণের উপর থাকবে।” (বুখারী)
- আবদুর রহমান ইবনে আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, “মানুষ যতক্ষণ সময় হওয়ামাত্র ইফতার করবে, ততক্ষণ কল্যাণের মধ্যে থাকবে।” (বুখারী)
ইফতারের দ্রুততা
- আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, “তোমরা দ্রুত ইফতার কর, কেননা ইহুদিরা দেরিতে ইফতার করে।” (তিরমিযী)
- আবদুল্লাহ ইবনে উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, “সে পর্যন্ত দ্বীন ইসলাম বিজয়ী থাকবে, যে পর্যন্ত মানুষ শিগগির ইফতার করবে। কেননা, ইহুদি ও খ্রিষ্টানরা বিলম্বে ইফতার করত।” (মুসনাদে আহমাদ)
ইফতারের সুন্নাত
- খেজুর দিয়ে ইফতার করা
- সাহল ইবনে সা’দ (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, “তোমরা যখন ইফতার করবে, তখন খেজুর দিয়ে ইফতার কর।” (তিরমিযী)
- তিন ঢোক পানি দিয়ে ইফতার করা:
- আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, “তোমাদের কারো যদি ইফতার করার সময় কিছু না থাকে, তাহলে সে তিন ঢোক পানি দিয়ে ইফতার করুক।” (তিরমিযী)
- ইফতারের আগে দোয়া করা:
- বায়হাকী (রহঃ) তার “শু’আবুল ঈমান”-এ ইবনে আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেছেন যে, রাসুলুল্লাহ (সাঃ) ইফতারের সময় বলতেন, “اللَّهُمَّ لَكَ صُمْتُ وَعَلَى رِزْقِكَ أَفْطَرْتُ” (অর্থ: “হে আল্লাহ! আমি তোমার জন্য রোজা রেখেছি এবং তোমার দেওয়া রিযিকের মাধ্যমে ইফতার করছি।”)**
ইফতারের ফজিলত
- রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, “রোজাদারের জন্য দুটি খুশি: একটি ইফতারের সময়, অপরটি আল্লাহর সঙ্গে সাক্ষাতের সময়।” (মুসলিম)
- আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, “আল্লাহর কাছে রোজাদারের দোয়া অত্যন্ত প্রিয়।”
আল্লাহ আমাদের সকলের দোয়া কবুল করুন।